রত্ন পাথর সম্পর্কে কিছু কথা
প্রতিটি গ্রহ নক্ষত্রই অণুপরমাণু দ্বারা সৃষ্টি।মানব দেহও অণুপরমাণু দ্বারা সৃষ্টি আবার প্রতিটি রত্ন পাথরও অণুপরমাণু দ্বারা সৃষ্টি।আমরা চোখে দেখতে পাই কারণ আমাদের চক্ষুদ্বয়ের উপর সূর্য রশ্মির আলোকের ক্রীয়ার ফলে।যাদের চোখের ক্ষমতা কমে যায় তাদের দৃষ্টি শক্তি ঝাপসা হয়ে আসে।বিশাল সূর্যের প্রখর রশ্মিও তাদের সঠিকভাবে কোন কিছু দেখাতে সক্ষম হয় না।সেখানে সামান্য দু’টি মাত্র লেন্স ব্যবহার করেই তারা সবকিছু সুন্দরভাবে দেখতে পারেন।
সূর্যের যেমন তেজ বিকিরণের ক্ষমতা আছে তেমনি আমাদের চোখের লেন্সেরও তেজ আহরণের ক্ষমতা আছে।সেই ক্ষমতা কমে গেলে অতিরিক্ত লেন্সের তেজ আহরণী ক্ষমতা আমাদের দৃষ্টিশক্তিকে সুস্থ্য করে তুলে।সূর্যের আলো প্রতিটি গ্রহের উপর পতিত হয় এবং গ্রহের মাধ্যমে গ্রহের বর্ণানুসারে পৃথক পৃথক আলোক রশ্মি ইথার তরঙ্গের মাধ্যমে পৃথিবীর উপর এসে পড়ে, সূর্য এবং প্রতিটি গ্রহ থেকে বেরিয়ে আসা সেই সব আলোক রশ্মিই আমাদের উপর নানাভাবে ক্রীয়া করে।গ্রহদের যেমন নিজস্ব তেজ বিকিরণের ক্ষমতা আছে তেমনি প্রতিটি রত্ন পাথরেরও পৃথক পৃথক তেজ আহরণের ক্ষমতা বিদ্যমান।ফলশ্রুতিতে রত্ন পাথর যদি সঠিকভাবে নির্ণয় করা না যায়, রত্ন পাথর ধারণে ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা যায়।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পৃথিবীতে যা কিছুই সৃষ্টি করেছেন তার মধ্যে ও প্রতিটি সৃষ্টির মধ্যে নর ও নারীর সৃষ্টি হয়েছে।লক্ষ্য করলে দেখবেন অনেক গাছে ফল হয় না, কারণ উক্ত গাছটি নর শ্রেণীর।আল্লাহর সৃষ্টির প্রতিটি বস্তুর যেমন নর ও নারী আছে, সেখানে রত্ন পাথরেরও নর ও নারী আছে।আপনি একটু লক্ষ্য করলে বুঝতে পারবেন ইমারত নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত পাথর ছোট বড় আকারে দেখতে পাবেন, কোন পাথর খুব কঠিন আবার কোন পাথর খুব নরম, তদ্রুপ মানব দেহে ব্যবহৃত রত্ন পাথরের ক্ষেত্রেও।পুরুষদের জন্য নারী শ্রেণীর ও নারীদের জন্য নর শ্রেণীর রত্ন পাথর যদি বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত মতে শোধন করা যায় তবে দ্রুত ফলপ্রদ হয়।বর্তমান সময়ে সঠিক অর্থাৎ ১০০ ভাগ বিশুদ্ধ রত্ন পাথর পাওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়েছে।যদিও দু’একটি পাওয়া যায়-তবে মূল্য এতো অধিক যে অনেকে কিনতে সাহস পান না।রত্ন পাথরের বয়স, রাসায়নিক উপাদান, কাঠিন্যতা, রত্নের আপেক্ষিক গুরুত্ব, আলোক বিচ্ছুরণ ক্ষমতা, সর্বোপরি রত্নের শুদ্ধতার উপর নির্ভর করে রত্নের মূল্য।আবার দেখতে হবে যে রত্নটি সুলগ্নে সৃষ্টি হয়েছে কিনা।কেননা কুলগ্নে বা কুসময়ে সৃষ্টি রত্ন পাথর মানব শরীরে অশুভ গ্রহের প্রভাব নিরসন করতে অক্ষম।এর জন্য দিব্যদৃষ্টিসম্পন্ন পাকা জহুরীর প্রয়োজন যিনি রত্নের বিশুদ্ধতা পরীক্ষা করতে সক্ষম।উদাহরণস্বরূপঃ মনে করুন আপনি কোন আসবাবপত্র তৈরি করবেন বলে মনস্থির করেছেন এবং সংশ্লিষ্ট দোকানেও গেলেন-এবার ধরুন সেগুন কাঠের আসবাবপত্র তৈরির জন্য কাঠের ক্রয় মূল্য জিজ্ঞেস করলেন, বিক্রেতা আপনাকে ৬০০, ১০০০, ১৫০০ ইত্যাদি মূল্যের সেগুন কাঠ দেখালেন।একটু ভালভাবে নিরীক্ষা করলে বুঝতে পারবেন ৬০০ টাকার কাঠের তুলনায় ১০০০ টাকার কাঠ উত্তম আবার ১০০০ টাকার কাঠের তুলনায় ১৫০০ টাকার কাঠ অতি উত্তম।এই মূল্য তারতম্য বিষয়টি হলো, উক্ত কাঠের বয়স ও তার কাঠিন্যতা এবং শুদ্ধতা।পৃথিবীর সব বস্তুর যেমন উত্তম, অতি উত্তম ও সর্বোত্তম বলে কথা আছে ঠিক তদ্রুপ রত্ন পাথরের ক্ষেত্রে উত্তম, অতি উত্তম ও সর্বোত্তম বলেও কথা আছে।রত্ন পাথর বিক্রয়ের প্রতিষ্ঠানে গেলে বুঝতে পারবেন যে একই ধরনের রত্ন পাথরের বিভিন্ন মূল্য নির্ধারণ করা আছে, এই মূল্যের তারতম্য ঘটে রত্নের বয়স শুদ্ধতা ও রাসায়নিক গঠন শৈলীর উপর ভিত্তি করে।আজকাল সিনথেটিক রত্ন পাথরে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে, পক্ষান্তরে বাংলাদেশ সরকার রত্ন পাথর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য এখনও কোন পরীক্ষাগার বা ল্যাবরেটরী স্থাপন করেন নি।অবশ্য ব্যক্তি মালিকানাধীন কিছু প্রতিষ্ঠান রত্ন পাথর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে থাকেন।তারা কেমন প্রতিষ্ঠান করেছেন তা আজও আমার অজ্ঞাত কেননা আমার কোন গ্রাহকদের রত্ন পাথর পরীক্ষার কোন প্রয়োজন আজ পর্যন্ত হয়নি যদিও কিছু কিছু গ্রাহক সিঙ্গাপুর থেকে পরীক্ষা করে রত্ন পাথর ধারণ করেছেন।
রত্ন পাথর কিভাবে নির্বাচন করতে হয়?
কোষ্ঠী বিচারের সময় যদি দেখা যায় যে, দুর্বল লগ্নপতি, রাশিপতি (অর্থাৎ রাশি ও লগ্নের অধিপতি গ্রহ) চতুর্থ ও নবমপতি বিশেষ অশুভ থাকে, অথবা গ্রহের দৃষ্টিচক্র বিচারে ঐ ভাবের অধিপতি যদি পাপপীড়িত হয় অথবা অন্যান্য ভাবের গ্রহ যদি দুর্বল থাকে, অথবা দশা-অর্ন্তদশা যদি অশুভ চলতে থাকে তবে সার্বিক বিচার বিশ্লেষণ করে ১টি বা সর্বোচ্চ দু’টি যথোপযুক্ত রত্ন পাথর নির্বাচন করে বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত মতে বাঁধাই ও শোধন করে শুভ নক্ষত্রাশ্রিত দিনে শুভ সময়ে ধারণ করতে হয়।যদি কারো কোষ্ঠী না থাকে তখন হস্তকর রেখা বিচার করে খুব সর্তকতার সহিত রত্ন পাথর নির্বাচন করতে হয়।
মহা রত্ম পাথর ক্রয়ের অসমর্থ্যে করণীয়
নবগ্রহের যেমন নয়টি মূল রত্ন পাথর রয়েছে তদ্রুপ নয়টি গ্রহের জন্য উপ রত্নও রয়েছে।উপরত্ন মূল রত্নের তুলনায় একটু বেশি ওজনের ধারণ করতে হয়।উপরত্নও খনিজ রত্ন এবং প্রাকৃতিক উপাদানে সৃষ্টি।তবে এর ক্রীয়া ধীরে ধীরে হয়, তবে মোটামুটি ভাল কাজ হয় দেখেছি।আজকাল উপরত্নও নকল বা ইমিটেশন হচ্ছে এ বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত।
রত্ন পাথর সম্পর্কে কিছু কথা
Reviewed by PIAS DEY
on
May 22, 2017
Rating:
No comments: